প্রবাসী আয় বৃদ্ধির শীর্ষতিনে বাংলাদেশ

প্রবাসী আয়

প্রবাসী আয় বেশি আসে এমন শীর্ষ ১০ দেশের ৭টিতে গত বছর আয় কমেছে। গত বছর জানুয়ারির শেষে সে ই দিনটি তে তখনো পর্যন্ত দশ হাজারের মতো করোনা ভাইরাসে র নিশ্চিত সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়েছে। মারা গেছে দুশোর বেশি। তবে তখনো পর্যন্ত এসব ঘটছে কেবল চীনে। করোনাভাইরাসের একটি সংক্রমণও তখনো পর্যন্ত চীনের বাইরে ঘটেছে বলে জানা যায়নি।জানুয়ারির সেই সময়ের পর পুরো বিশ্ব এবং আমাদের সবার জীবন বিরাটভাবে পাল্টে গেছে। প্রথম যখন চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল, তখন যেমন এটি সত্যি ছিল, এখনো তাই।আপনি পৃথিবীর যেখানেই থাকুন, করোনাভাইরাসের এই আচরণই আসলে ব্যাখ্যা করবে সেখানকার পরিস্থিতি।

কোভিড-১৯ মহামারি র গত বছর ধাক্কা সত্ত্বে ও অল্প যে কয়েক টি দেশের প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ ও একটি। দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ই আই ইউ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে এ । এতে বলা হয়েছে, প্রবাসী আয় বেশি আসে এমন শীর্ষ ১০ দেশের ৭টিতে গত বছর আয় কমেছে। আর এ তিনটি দেশে আয় বেড়েছে। দেশগুলো হলো মেক্সিকো, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। গত বছর এ ভারত, চীনের মতো দেশগুলোর প্রবাসী আয় ও কমেছে।

ইআইইউ প্রকাশিত ‘কোভিড-নাইন্টিন অ্যান্ড মাইগ্র্যান্ট রেমিট্যান্স : অ্যা হিডেন ক্রাইসিস লুমিং?’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা বিপর্যয়ের মধ্যেও ২০২০ সালে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় এসেছে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ডলার, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালে প্রবাসী আয় ছিল ১ হাজার ৮৪০ কোটি ডলার। ২০১৯ সালের তুলনায় গত বছর মেক্সিকোর প্রবাসী আয় বেড়েছে ৯ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ৪ শতাংশ। গত বছর মেক্সিকোর প্রবাসী আয়ের পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ১৫০ কোটি ডলার বেড়ে ৪ হাজার ৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। একইভাবে পাকিস্তানে ২০১৯ সালে ২ হাজার ২২০ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। গত বছর তা বেড়ে ২ হাজার ৪১০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিবেদনের এ তথ্য অনুযায়ী, চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ও নিজ ও দেশে থাকা প্রিয়জন কে ভালো রাখতে অভিবাসী শ্রমিকদে এর প্রচেষ্টার ফলাফল ই এই তিন টি দেশের প্রবাসী আয় বৃদ্ধি। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে র ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণ গুলো ভিন্ন ধর্মী। প্রতিবেদন এর বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ দুই দেশের প্রবাসী শ্রমিকদে এর র অনেকে এর তাদের চাকরি হারিয়ে নিজেদ এর জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন। উপসাগরীয় এর দেশগুলো র শ্রমিকদের মধ্যে এই প্রবণ তা বেশি ছিল। কারণ করোনা এরর কারণে তেলের দাম কমে যাওয়া এবং পর্যটন ব্যবসায় ধস নামায় ও ই অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনীতি এর সংকটে পড়েছে। আবার বাংলাদেশে প্রবাসী আয় এর বেশি আসার আরেক টি কারণ, এর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এরর কারণে বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠানো এর পরিমাণ বেড়েছে। আবার বৈধভাবে টাকা পাঠালে প্রণোদনার হারও বাড়ানো হয়েছে, যা প্রবাসী শ্রমিকদ এর বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠান এর উৎসাহ বাড়িয়েছে।এভাবে প্রবাসী আয় এর বৃদ্ধি এর বিষয় টি সাময়িক। ২০২১ সালেই প্রবাসী আয় আবার পড়ে যাওয়া এর ঝুঁকি আছে।

অন্যদিকে গত বছর প্রবাসী এর আয় কমার তালিকায় আছে ভারত, চীন, ফিলিপাইন, মিসর, নাইজেরিয়া, ভিয়েতনাম ও ইউক্রেন। সবচেয়ে বেশি প্রবাসী এর আয় অর্জন কারী ভারত এর আগের বছরের চেয়ে আয় কমেছে ৮০০ কোটি ডলার এর মতো। ২০২০ সালে দেশটিতে প্রবাসী আয় এসেছে ৭ হাজার ৫৯০ কোটি ডলার। অন্যদিকে চীনের প্রবাসী এর আয় কমেছে প্রায় ৯০০ কোটি ডলার। ২০২০ সালে দেশটির প্রবাসী আয় এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার। চীন, ভারত ও ভিয়েতনামে ২০১৯ সালের তুলনায় এর গত বছর প্রবাসী আয় কমেছে যথাক্রমে ১৩, ৯ ও ৮ শতাংশ।